প্রিন্ট এর তারিখঃ মে ২৪, ২০২৫, ৯:০৫ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ মে ২২, ২০২৫, ৩:৪৬ অপরাহ্ণ
এবার তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুল স্বাক্ষর জাল করে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যে অভিযোগ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:
টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে এসএসসি পরীক্ষায় বই দেখে ও শিক্ষকের সহায়তায় পরীক্ষা শিরোনামে ভাইরাল হওয়া তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন তুহিনের বিরুদ্ধে এবার স্বাক্ষর জাল করে কোটি টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের লিখিত অভিযোগ করেছেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক সভাপতি।
লিখিত অভিযোগে জানানো হয় কেবল সভাপতি নন, উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বোর্ড প্রতিনিধি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষরও জাল করে ৯ জনকে ভুয়া নিয়োগ নেয়া হয়েছে। এসব নিয়োগের কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে।
এছাড়াও নানা অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের গর্ভনির বডির সাবেক সভাপতি আবু হানিফ মিয়া জেলা প্রশাসক বরারব লিখিত অভিযোগ দেন।
জানা যায়, তোফাজ্জল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুলটি ২০১৫ সালে উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়নের তালতলা-মাদারিয়াপাড়া গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয়।
গর্ভনির বডির সাবেক সভাপতি আবু হানিফ মিয়া জেলা প্রশাসক বরারব লিখিত অভিযোগে উল্লেখ্য করেন, আমি ওই প্রতিষ্ঠানে প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মনোনীত হই। ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ওই পদে নিয়োজিত থাকি। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি চলমান থাকলেও প্রতিষ্ঠানের কোন দাপ্তরিক কাজে আমার কোন প্রকার স্বাক্ষর নেয়া হয়নি। সকল কাজে আমার স্বাক্ষর জাল করে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালিত হয়ে আসছে। ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত হলে তড়িঘড়ি করে ব্যাকডেটে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেখিয়ে ভুয়া নিয়োগপত্র তৈরি করেন। ওই প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আমারসহ উপজেলা শিক্ষা অফিসার, বোর্ড প্রতিনিধি ও ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষরও জাল করে ভুয়া নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এসব নিয়োগের কথা বলে প্রার্থীদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। কিন্তু কোন নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়নি।
তিনি আরো উল্লেখ্য করেন, এমতাবস্থায় নয়জনকে ভুয়া নিয়োগ দেখিয়ে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে শিক্ষক-কর্মচারীদের এমপিওভুক্ত ও বেতন পাইয়ে দেয়ার জন্য ভুয়া ফাইল পাঠানো হলে বোর্ড কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই করে ডিজি প্রতিনিধির স্বাক্ষর মিল না পেয়ে তা নোটিশ আকারে ওয়েব সাইটে প্রকাশ করেন।
এদিকে প্রতিষ্ঠানটিতে কোন শিক্ষক না থাকায় ক্লাস কার্যক্রম পরিচালিত হয় লাইব্রেরিয়ান হাসিনা আক্তার, অফিস সহকারি আবু জায়েদ তালুকদার ও ল্যাব সহকারি জাহাঙ্গীর আলমকে দিয়ে। এছাড়াও ওই প্রতিষ্ঠানে নবম শ্রেণী ও এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্র বিদ্যমান থাকায় তাদের দিয়েই এসএসসি বোর্ড পরীক্ষার কক্ষ পরিদর্শকের দায়িত্ব পালন করানো হয়। প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীদের কোন প্রকার হাজিরা খাতা ব্যবহার করা হয় না। শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশন, বেতন, ফরম পূরণ ও সনদ বিতরণ বাবদ ফি নেয়া হলেও তার কোন প্রকার রশিদ দেয়া হয়না। প্রতি বছর ২৪০ সেট বই বরাদ্দ আনা হলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫০ থেকে ৭০ জন। বাকী বইগুলো প্রতি বছর কেজি দরে বিক্রি করা হয়। প্রতি বছর সমবায় অফিসে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন-ভাতার তালিকা পেশ করা হলেও তাদের এক টাকাও বেতন দেয়া হয় না। ওই প্রতিষ্ঠানে আমার স্ত্রী রাশেদা বেগম, মেয়ে আঁখি খাতুন ও ছেলে রাশেদুল ইসলাম রাহাতের নামে ২৫ শতাংশ ভূমি রয়েছে। যা তিনি প্রভাব খাঁটিয়ে জবরদখল করে রেখেছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে তোফাজ্জাল হোসেন তুহিন কারিগরি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ তোফাজ্জল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ করেছে কি-না তাই তো জানিনা। যেটা জানিনা সে বিষয়ে কিছু বলার নেই।
এ প্রসঙ্গে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) বলেন, সঞ্জয় কুমার মহন্ত বলেন, তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© স্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫